পলাশী ট্রাজেডির ইতিবৃত্ত
পলাশী ট্রাজেডির ইতিবৃত্ত বই প্রসঙ্গ
ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা এই যে ইতিহাস থেকে আমরা শিক্ষা নিই না ৷ কথাটি সত্য অন্তত বাঙালি জাতির জন্যতো বটেই ৷ বাংলার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রাজেডি হল পলাশীর যুদ্ধ ৷ এই যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে শুধু বাংলার নয়, বরং পুরো ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়ে পড়ে ৷ চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের তুলনারোহিত এই যুদ্ধের অনিবার্য শিকার হয় বাংলা তথা ভারতবর্ষের মুসলিম সম্প্রদায় ৷ কিন্তু সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার থেকে আশা লস্কর ইংরেজ বেনিয়ার দল, তাদের এদেশীয় দেশদ্রোহী অত্যাচারীদের প্রত্যক্ষ মদদ ও সহযোগিতায় কেবল মুসলমানদেরকে সর্বশান্ত করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি, বরং হাজার বছরের সমৃদ্ধ ভারতবর্ষের শির দ্বারা ভেঙে গুঁড়ো করে দেয় ৷
পলাশীর যুদ্ধের ফলাফল প্রসঙ্গে পড়ে যাচ্ছি ৷ কিন্তু বাংলা তথা ভারতবর্ষের ইতিহাসে এত যে ব্যাপক প্রভাব বিস্তারকারী ঘটনা সেটি থেকে শিক্ষা গ্রহণ তো দূরের কথা বরং ইতিহাসের মোর ঘোরানো মর্মান্তত এ ঘটনাটি যেন অনেকটাই উপেক্ষার বিষয় হয়ে যাচ্ছে ৷ প্রতি বছর ২৩-শে জুন আসে এবং আর দশটি সাধারণ দিনের মতো নিরবেই চলে যায় ৷ এমনটি হয়ে আসছে বিগত দুই শতাধিক বছর ধরে ৷ অথচ ২৩-শে জুন আমাদের স্বাধীনতা হারানোর দিন ৷ ভারতবর্ষের ভাগ্য বিপর্যয়ের সূচনার দিন এবং ভারতবর্ষের মুসলমানদের নাম নিশানা নিশ্চিহ্ন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের ভয়াবহ স্মারক এই দিন ৷
দুর্লভদের দ্বারা স্বদেশের প্রতি চরম বিশ্বাস ঘাতকতার দিন ৷ অপরদিকে নবাব সিরাজউদ্দৌলার মত দেশপ্রেমিক বীরের “শির দেগা নেহি দেগা আমামা” মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে দেশ মাতৃকার জন্য জীবন বিসর্জনের দিন । এটি যেমন স্বাধীনতা হারানোর দিন, ঠিক তেমনি স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রামে বজ্র শপথ গ্রহণেরও দিন ৷
No comments